পেহেলগাম হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চরম উত্তেজনায়; ওআইসি’র বিবৃতিতে ভারতের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ, আন্তর্জাতিক মহলে সংঘর্ষের আশঙ্কা ঘনীভূত
৫৭ মুসলিম দেশের সমর্থনে পাকিস্তান, উত্তেজনায় অস্থির ভারত
ওআইসি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ৫৭টি মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা একসাথে
কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ বন্দুক হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপ করলেও, ইসলামাবাদ বরাবরই তা অস্বীকার করে স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে ভারত-পাকিস্তান এই চিরায়ত উত্তেজনার নতুন মোড় নিয়েছে ওআইসি (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন)-এর সাম্প্রতিক বিবৃতির পর।
৫৭টি মুসলিম দেশ নিয়ে গঠিত ওআইসি এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভারতের ভিত্তিহীন অভিযোগ দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, “আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অটল অবস্থানে রয়েছি, তবে কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই দোষারোপের রাজনীতি উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে।”
কাশ্মীর ইস্যুতেও সংস্থাটি তাদের পূর্ববর্তী অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে জানিয়েছে, “জম্মু ও কাশ্মির এখনও একটি অমীমাংসিত সমস্যা, যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী সমাধান হওয়া উচিত।”
বিশ্লেষকদের মতে, ওআইসি’র এমন অবস্থান ভারতের কূটনৈতিক কৌশলে বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। বিশেষ করে যখন কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সহানুভূতি পেতে চাইছে দিল্লি।
পেহেলগাম হামলার জের ধরে ইতোমধ্যে ভারত একাধিক কড়াকড়ি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে—আটারি সীমান্ত বন্ধ, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল এবং ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও সিমলা চুক্তি স্থগিতসহ আকাশসীমা বন্ধ, বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতকে যুদ্ধের ঘোষণা হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। আমরা আমাদের পানির অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।”
অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, “পেহেলগাম হামলার পর প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের রক্ত ফুটছে। জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করাই আমাদের অঙ্গীকার।”
তবে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা। তাঁদের মতে, ভারত এখনও সরাসরি প্রমাণ হাজির করতে না পারায় আন্তর্জাতিক মহলে তার অবস্থান দুর্বল হতে পারে। একইসাথে, চলমান উত্তেজনা সামরিক সংঘর্ষে রূপ নিলে তা শুধু দুই দেশের জন্য নয়, গোটা অঞ্চলের জন্যই ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : NewsUPload
কমেন্ট বক্স